সময়ের সাথে সাথে স্যালারি বাড়ার ব্যাপারে আমাদের আইডিয়া থাকা দরকার। তাহলে অনেকের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হবে ফিউচার নিয়ে। কারন, শুধু চাকরি পেলে কি হবে, চলার মত বেতনও তো পেতে হবে, তাই না?
এর আগে আমি একটি ব্লগ প্রকাশ করেছিলাম, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর স্যালারি কম কেন? আপনারা চাইলে এই লিংক এ ক্লিক করে জেনে নিতে পারেন কারন গুলো।
একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর স্যালারি কত হবে সেটা এক্সেটলি বলা যায় না। কারন স্যালারির নির্ভর করে অনেক রিলেটেড বিষয়ের উপর। যেহেতু আমরা দীর্ঘ দিন যাবত ইন্টার্নশিপ এন্ড জবস ইন বাংলাদেশ গ্রুপে জব সার্কুলার নিয়ে কাজ করছি, তাই আমাদের একটা ভালো আইডিয়া হয়েছে।
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর স্যালারি কত তা কি জানেন?
আমরা গ্রুপে সার্কুলার হওয়া জব গুলো এনালাইসিস করেছি, ইন্টার্নেট থেকে তথ্য নিয়েছি। এর বাইরে অনেক ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট এর সাথে কথা বলেছি। এই ব্লগের সাথে অনেক কোম্পানির স্যালারি স্ট্রাকচার নাও মিলতে পারে। তবে স্যালারি রেঞ্জ অনেক টা এ রকমই হয়ে থাওকবে।
ইন্টার্ন হিসাবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর স্যালারিঃ
নর্মালি বাংলাদেশের বেশির ভাগ কোম্পানি ফ্রি-আনপেইড ইন্টার্নশিপ অফার করবে। যেখানে আপনাকে ৪-৬মাস কাজ করতে হবে বিনা বেতনে। অনেক সময় কোম্পানি গুলো সামান্য কিছু এলাউন্স অফার করে থাকে।
অনেক যায়গা সেলফ পেইড ইন্টার্নশিপ রয়েছে। সেখানে ক্যান্ডিডেট কে নিজের টাকা দিতে হয়। এটা ইন্টার্নশিপ হলেও, মুলত ট্রেইনিং করানো হয়ে থাকে। যে সব ক্যান্ডিডেট ইউনিভার্সিটি লাইফ এ তেমন কাজ করেন না, মুলত তাদের সেলফ পেইড ইন্টার্ন করতে হয়।
বাংলাদেশের মিড এবং টপ কোম্পানি গুলো পেইড ইন্টার্নশিপ অফার করে থাকে। সে ক্ষেত্রে স্যালারি রেঞ্জ থাকে ৪-১০ হাজার টাঁকার মধ্য। মুলত কোম্পানি গুলো নিজেদের পাইপ-লাইন তৈরির জন্য ইন্টার্ন নিয়ে থাকে।
কিছু যায়ান্ট কোম্পানি আছে যেমন স্যামসাং, থেরাপ। এই কোম্পানি গুলো ইন্টার্নশিপ এর সময় ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত স্যালারি অফার করে থাকে। তবে এই কোম্পানি গুলোতে ইন্টার্ন পজিশনের জন্য যথেষ্ট স্কিল্ড ক্যান্ডিডেট হতে হয়।
এন্ট্রি-লেভেল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর স্যালারিঃ
ইঞ্জিনিয়ারিং এর শুরুতে বেতন কত হবে সেটা নির্ভর করে, ক্যান্ডিডেট কোন কোম্পানিতে জয়েন করবে, কোন ডিপার্টমেন্ট এ জয়েন করবে তার উপর। কারন একজন প্রোগ্রামার এবং একজন কোয়ালিটি এনালিস্ট এর বেতন এক রকম নয়। বা একজন টেকনিক্যাল রাইটার এর বেতন সম্পুর্ন আলাদা।
সাধারনত, বাংলাদেশের ৩ ধরনের স্যালারি রেঞ্জ দেখা যায়। বাংলাদেশি স্টার্ট-আপ, ছোট এবং মিড লেভেল কোম্পানি, বাংলাদেশী বড় কোম্পানি এবং বিদেশি কোম্পানির ব্রাঞ্চ।
বাংলাদেশি স্টার্ট-আপ, ছোট এবং মাঝারি ধরনের কোম্পানি গুলোতে সাধারনত স্যালারি রেঞ্জ থাকে ১২-১৮ হাজার টাকা। এটা দেখতে খারাপ লাগলেও, সত্যি এটাই যে, মাত্র ১২ হাজার থেকে স্যালারি শুরু হবে। ম্যাক্সিমাম ১৮ হাজার হতে পারে।
বাংলাদেশি স্ট্যাবল এবং বড় কোম্পানি গুলোতে ১৮-২৫ হাজার টাকা স্যালারি অফার করা হয়ে থাকে। কোম্পানি গুলোতে এন্ট্রি-লেভেল পজিশনে স্যালারি ফিক্স করা থাকে।
আর, বিদেশি কোম্পানির ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশি যায়ান্ট কোম্পানি গুলোতে স্যালারি রেঞ্জ থাকে ২৫-৪০ হাজার টাকা। আগেই বলেছি, এই কোম্পানি গুলোতে জব পেতে হলে আপনাকে ভালো স্কিল্ড হতে হবে।
মিড লেভেল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর স্যালারিঃ
দেশিয় কোম্পানি গুলোতে মিড লেভেল পজিশনে ৩৫-৮০ হাজার টাকা স্যালারি হয়ে থাকে সাধারনত। মিড লেভেল বলতে ১-৩ বছরের অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারদের বুঝায়। তবে বাংলাদেশি আপার লেভেল কোম্পানি গুলোতে মিড লেভেল পজিশনে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা স্যালারি হতে পারে।
এখানে একটা ব্যাপার হচ্ছে, মিড লেভেল এবং টপ লেভেল পজিশন গুলোতে সাধারনত স্যালারি রেঞ্জ থাকে। এবং দক্ষতা, অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে স্যালারি ফিক্স করা হয়ে থাকে।
যদি কেউ আগের কোম্পানি তে ভালো কন্ট্রিবিউশন করে এবং ভালো ভাবে কাজ শিখে তাহলে সাধারনত স্যলারি বৃদ্ধি পায় বেশি। আর বড় হাউজ গুলোতে স্যালারি বেশি হয়ে থাকে। এখানে লিডিং কোয়ালিটি দেখা হয় ভালো ভাবে।
বিদেশি কোম্পানির বাংলাদেশী ব্রাঞ্চ গুলোতে মিড লেভেল পজিশনে স্যলারি ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
টপ লেভেল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর স্যালারিঃ
টপ লেভেল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে বাংলাদেশী কোম্পানি গুলোতে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত স্যালারি হয়ে থাকে যেটা বিদেশি কোম্পানির মিড লেভেল ইঞ্জিনিয়ার এর স্যালারি। আর বিদেশি কোম্পানিতে সেটা ১০ লাখ পর্যন্ত হতে পারে।
সাধারনত একটা কোম্পানিতে বেসিক স্যালারির বাইরে প্রফিট শেয়ারিং থাকে, বোনাস থাকে। কিন্তু একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য কেউ স্যালারি নিয়ে ভাবে না। সমস্যা সমাধান হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে নেশার মত।