যে সমাসে পূর্ব পদের বিভক্তি লোপ পায় এবং পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায়, তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমনঃ ঘি দ্বারা ভাজা = ঘিভাজা, মন দ্বারা গড়া = মনগড়া, মধু দিয়ে মাখা = মধুমাখা, মেঘ হতে মুক্ত = মেঘমুক্ত, ঘর হতে ছাড়া = ঘরছাড়া ইত্যাদি।
তৎপুরুষ সমাসের প্রকারভেদ
তৎপুরুষ সমাস নয় প্রকার। যথা:
১) দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস,
২) তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস,
৩) চতুর্থী তৎপুরুষ সমাস,
৪) পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস,
৫) ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস,
৬) সপ্তমী তৎপুরুষ সমাস,
৭) নঞ্ তৎপুরুষ সমাস,
৮) উপপদ তৎপুরুষ সমাস এবং
৯) অলুক তৎপুরুষ সমাস।
১. দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদের দ্বিতীয়া বিভক্তি (কে, রে) ইত্যাদি লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস বলে।
২. তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদে তৃতীয়া বিভক্তির (দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক ইত্যাদি) লোপে যে সমাস হয়, তাকে তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস বলে।
৩. চতুর্থী তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদে চতুর্থী বিভক্তি (কে, জন্য, নিমিত্ত ইত্যাদি) লোপে যে সমাস হয়, তাকে চতুর্থী তৎপুরুষ সমাস বলে।
৪. পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদে পঞ্চমী বিভক্তি (হতে, থেকে ইত্যাদি) লোপে যে তৎপুরুষ সমাস হয়, তাকে পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস বলে।
৫. ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদে ষষ্ঠী বিভক্তির (র, এর) লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস বলে।
৬. সপ্তমী তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদে সপ্তমী বিভক্তি (এ, য়, তে) লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে সপ্তমী তৎপুরুষ সমাস বলে।
৭. নঞ্ তৎপুরুষ সমাস : না বাচক নঞ্ অব্যয় (না, নেই, নাই, নয়) পূর্বে বসে যে তৎপুরুষ সমাস হয়, তাকে নঞ্ তৎপুরুষ সমাস বলে।
৮. উপপদ তৎপুরুষ সমাস : যে পদের পরবর্তী ক্রিয়ামূলের সঙ্গে কৃৎ প্রত্যয় যুক্ত হয়, সে পদকে উপপদ বলে। কৃদন্ত পদের সাথে উপপদের যে সমাস হয়, তাকে উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলে।
৯. অলুক তৎপুরুষ সমাস : যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের দ্বিতীয়াদি বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলুক তৎপুরুষ সমাস বলে।