বিশেষণ ও বিশেষ্য পদ মিলে যে সমাস হয় এবং বিশেষ্যের বা পরপদের অর্থই প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন– যিনি রাজা তিনিই ঋষি = রাজর্ষি। তেমনি কয়েকটি কর্মধারয় সমাসের উদাহরণ হলো– যে চালক সেই চতুর = চালাক-চতুর; যিনি জজ তিনিই সাহেব = জজ সাহেব; যিনি লাট তিনিই সাহেব = লাটসাহেব।
কর্মধারয় সমাসের প্রকারভেদ
কর্মধারয় সমাস কয়েক প্রকার হতে পারে। যেমন:
ক) সাধারণ কর্মধারয়,
খ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়,
গ) রূপক কর্মধারয়,
ঘ) উপমান কর্মধারয় ও
ঙ) উপমিত কর্মধারয়।
ক. সাধারণ কর্মধারয়ঃ বিশেষণ ও বিশেষ্য, বিশেষ্য ও বিশেষ্য অথবা বিশেষণ ও বিশেষণ পদের মধ্যে এই সমাস হয়ে থাকে। যেমন, নীল যে আকাশ = নীলাকাশ।
খ. মধ্যপদলোপী কর্মধারয়ঃ কর্মধারয় সমাসে কোন কোন স্থানে মধ্যপদের লোপ হয়। সেজন্যেই একে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলে। যথা: হিমালয় নামক পবর্ত = হিমালয়পবর্ত। এখানে ‘নামক’ মধ্যপদের লোপ হয়েছে।
গ. রূপক কর্মধারয়ঃ উপমেয় পদে উপমানের আরোপ করে যে সমাস হয়, তাকে রূপক কর্মধারয় সমাস বলে। এতে উপমেয় পদে রূপ শব্দের যোগ থাকে। যেমন: বিদ্যারূপ ধন = বিদ্যাধন। এখানে ‘রূপ’ শব্দের যোগ রয়েছে।
ঘ. উপমান কর্মধারয়ঃ উপমানবাচক পদের সাথে সমান ধর্মবাচক পদের মিলনে যে সমাস হয়, তাকে উপমান কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন: শশের (খরগোশের) ন্যায় ব্যস্ত = শশব্যস্ত।
ঙ. উপমিত কর্মধারয়ঃ সমান ধর্মবাচক পদের প্রয়োগ না থাকলে উপমেয় ও উপমান পদের যে সমাস হয়, তাকে উপমিত কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন: মুখ চন্দ্রসদৃশ = মুখচন্দ্র।