যেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি শব্দের শেষে যুক্ত হয়ে ঐ শব্দটিকে বাক্যে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে, সেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টিকে বিভক্তি বলে। যেমনঃ শিশুরা খেলছে। এখানে ‘শিশু’ শব্দের শেষে ‘রা’ যুক্ত হয়ে ‘শিশুরা’ হয়েছে এবং ‘খেল্’ ক্রিয়ামূলের শেষে ‘ছে’ যুক্ত হয়ে ‘খেলছে’ হয়েছে। এই ক্ষেত্রে ‘রা’ এবং ‘ছে’ হলো বিভক্তি।
বিভক্তির প্রকারভেদ
বিভক্তি দুই প্রকার। যথাঃ (ক) শব্দ বিভক্তি ও (খ) ক্রিয়া বিভক্তি।
ক. শব্দ বিভক্তি : শব্দের শেষে যেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে পদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও কারক সৃষ্টি করে সেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টিকে শব্দ বিভক্তি বলে। যেমন– পাগল + এ = পাগলে, নদী + তে = নদীতে, টাকা + য় = টাকায়। এখানে এ, তে, য়-এগুলাে হলাে বিভক্তি।
শব্দ বিভক্তি আবার সাত প্রকার। যথা– প্রথমা, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী ও সপ্তমী।
খ. ক্রিয়া বিভক্তি : ক্রিয়ামূল বা ধাতুর শেষে যে বিভক্তি যুক্ত হয়, তাকে ক্রিয়া বিভক্তি বলে। যেমন– পড় + এ = পড়ে, খেল্ + আ = খেলা, কর + ই = করি। এখানে এ, আ, ই এগুলাে হলাে বিভক্তি।
মনে রাখবেঃ ক্রিয়া বিভক্তিকে ধাতু বিভক্তিও বলা হয়।
অনুসর্গ ও বিভক্তির পার্থক্য কি?
অনুসর্গ ও বিভক্তির পার্থক্য নিম্নরূপঃ-
অনুসর্গ
- অনুসর্গ হলো স্বতন্ত্র পদ, শব্দের সঙ্গে মিশে যায় না, আলাদা থাকে।
- অনুসর্গের নিজের অর্থ আছে।
- অনুসর্গ এককভাবে আলাদা হয়ে ব্যবহৃত হতে পারে।
বিভক্তি
- বিভক্তি শব্দের সঙ্গে মিশে পদ গঠন করে, আলাদা থাকে না।
- বিভক্তির নিজের কোনো অর্থ নেই।
- বিভক্তি এককভাবে আলাদা হয়ে ব্যবহৃত হতে পারে না।