বাক্য হলো পদের সমষ্টি। যেসব পদের সাহায্যে মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করা যায়, তাকে বাক্য বলে।
একটি সার্থক বাক্যের তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার। যথা : (ক) আকাঙ্ক্ষা, (খ) আসক্তি ও (গ) যোগ্যতা।
ক. আকাঙ্ক্ষা : বাক্যের অর্থ ভালোভাবে বোঝার জন্যে এক পদ শোনার পর অপর পদ শোনার আগ্রহকে আকাঙ্ক্ষা বলে। যেমন– সত্য কথা না বলে; আমি আগামীকাল স্কুলে....।
খ. আসক্তি : বাক্যের অর্থসংগতি রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল পদবিন্যাসকে আসক্তি বলে। যেমন– ‘দুধ থেকে দই হয়’। এখানে, হয় থেকে দুধ দই – এমন বললে বাক্য হবে না।
গ. যোগ্যতা : বাক্যের পদসমূহের অর্থগত ও ভাবগত মিল থাকলে তাকে যোগ্যতা বলে। যেমন– বর্ষাকালে জলপথে নৌকা চলছে। এখানে বর্ষাকালে আকাশপথে চলে নৌকা – বললে বাক্য হবে না।
বাক্যের প্রকারভেদ
অর্থ অনুসারে বাক্য পাঁচ প্রকার। যেমন–
ক. বিবৃতিমূলক বাক্য
খ. প্রশ্নবােধক বাক্য
গ. আদেশ বা অনুরােধসূচক বাক্য
ঘ. ইচ্ছা বা আশীর্বাদসূচক বাক্য
ঙ. আবেগসূচক বাক্য।
ক. বিবৃতিমূলক বাক্য : যে বাক্য দ্বারা কোন বিবৃতি প্রদান করা হয়, তাকে বিবৃতিমূলক বাক্য বলে। যেমন– মাহিন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। আমি আমার দেশকে ভালবাসি।
খ. প্রশ্নবােধক বাক্য : যে বাক্য দ্বারা কোন কিছু জিজ্ঞাসা বা প্রশ্ন করা হয়, তাকে প্রশ্নবােধক বাক্য বলে। যেমন– তােমার নাম কী? তুমি কোন্ শ্রেণীতে পড়? তােমার বাবা কী করেন?
গ. আদেশ বা অনুরােধসূচক বাক্য : যে বাক্য দ্বারা আদেশ, উপদেশ, অনুরােধ ইত্যাদি বুঝায়, তাকে আদেশ বা অনুরােধসূচক বাক্য বলে। যেমন– অংকটি কর। (আদেশ)
দয়া করে আমাকে বইটি দিন। (অনুরােধ)
গুরুজনকে ভক্তি করবে। (উপদেশ)
কখনাে মিথ্যা বলাে না। (উপদেশ)
ঘ. ইচ্ছা বা আশীর্বাদসূচক বাক্য : যে বাক্য দ্বারা মনের ইচ্ছা বা প্রার্থনা বুঝায়, তাকে ইচ্ছা বা আশীর্বাদসূচক বাক্য বলে। যেমন–
তুমি জীবনে সুখী হও। (ইচ্ছা)
খােদা তােমার মঙ্গল করুন। (প্রার্থনা)
ঙ. আবেগসূচক বাক্য : যে বাক্য দ্বারা মনের আকস্মিক ভাব বা আবেগ প্রকাশ পায়, তাকে আবেগসূচক বাক্য বলে। যেমন–
হায়! আমার সর্বনাশ হয়েছে।
সাবাস! আমরা খেলায় জিতেছি।
বাহ! পাখিটি কী সুন্দর।