ভাস্কুলার বান্ডল কাকে বলে? বিভিন্ন ধরনের টিস্যুতন্ত্র

 উদ্ভিদদেহে বিদ্যমান যেসব টিস্যু নালিকা বা বান্ডলরূপে অবস্থান করে পানি, খনিজ লবণ ও খাদ্য পরিবহনে নিয়োজিত থাকে তাদের ভাস্কুলার বান্ডল বা পরিবহন টিস্যুগুচ্ছ বলে। উদ্ভিদের জাইলেম টিস্যু মূল হতে কাণ্ড, পাতা ও অন্যান্য সবুজ অংশে পানি ও খনিজ লবণ পরিবহন করে এবং ফ্লোয়েম টিস্যু পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্যদ্রব্য উদ্ভিদদেহের অন্যান্য সজীব অংশে পরিবহন করে। এজন্য জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুকে ভাস্কুলার বান্ডল বা পরিবহন টিস্যুগুচ্ছ বলা হয়। সাধারণত  কান্ডে বিদ্যমান জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যু একই ব্যাসার্ধে থেকে বান্ডল গঠন করে কিন্তু মূলে এরা পৃথক ব্যাসার্ধে থেকে বান্ডল গঠন করে।

বিভিন্ন ধরনের টিস্যুতন্ত্র

এপিডারমাল টিস্যুতন্ত্রঃ

উদ্ভিদ অঙ্গের বহিরাবরণ বা ত্বক সৃষ্টি করে তাকে এপিডারমাল বা ত্বকীয় টিস্যুতন্ত্র বলে। উদ্ভিদের কান্ড, শাখা-প্রশাখা, পাতা, মূল, ফুল, ফল বীজ প্রভৃতি অঙ্গের ত্বক এই টিস্যুতন্ত্রের অন্তর্গত।

স্টোমাটা বা পত্ররন্ধ্রঃ

উদ্ভিদের বায়োবীয় অংশের ত্বকে অবস্থিত দুটি রক্ষীকোষ দিয়ে বেষ্টিত ও নিয়ন্ত্রিত বিশেষ ছিদ্রকে স্টোমাটা বা পত্ররন্ধ্র বলে। সাধারণত দিনের বেলায় পত্ররন্ধ্র খোলা থাকে এবং রাতের বেলায় বন্ধ থাকে।

পত্ররন্ধ্রের কাজঃ

  • উদ্ভিদের ভেতর ও বাইরের পরিবেশের মধ্যে গ্যাসের আদান-প্রদান করা।
  • মূল দ্বারা সংগৃহীত পানি প্রস্বেদনের সাহায্যে বাষ্পাকারে বের করে দেয়া।
  • সালোকসংশ্লেষণের সময় পত্ররন্ধ্র পথে বায়ু হতে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস সংগ্রহ ও অক্সিজেন গ্যাস ত্যাগ করা।
  • শ্বসনের সময় রন্ধ্র পথে বায়ু হতে অক্সিজেন গ্যাস গ্রহণ করা ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস ত্যাগ করা।
  • রক্ষীকোষ পত্ররন্ধের খোলা বন্ধ হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে ।
  • রক্ষীকোষের ক্লোরোপ্লাস্ট খাদ্য তৈরি করে। 

পানি পত্ররন্ধ্র  বা হাইডাথোডঃ

বিশেষ পরিস্থিতিতে উদ্ভিত দেহ থেকে দেহের অঙ্গের মাধ্যমে পানি নির্গত হয় তাকে পানি পত্ররন্ধ্র বা হাইডাথোড বলে। পানি-পত্ররন্ধ্র এক বিশেষ ধরনের পানি নির্মোচন অঙ্গ। ঘাস, কচু  টমেটো ইত্যাদি গাছের পাতার কিনারায় প্রচন্ড গরমের দিনে পানির ফোঁটার সারি দেখে  এ অঙ্গের অবস্থান জানা যায়।

গাটেশনঃ

পানি পত্ররন্ধ্র বা হাইডাথোড দিয়ে তরল পানি বের হয়ে যাওয়াকে গাটেশন বলে।

গ্রাউন্ড টিস্যুতন্ত্রঃ

ত্বক ও পরিবহনতন্ত্র ছাড়া উদ্ভিদ দেহের অন্যান্য অংশগ্রহণকারী টিস্যুতন্ত্রকে গ্রাউন্ড টিস্যুতন্ত্র বলে। একে আদি টিস্যুতন্ত্রও বলে। এক বা একাধিক টিস্যু নিয়ে এই টিস্যুতন্ত্র গঠিত।

প্যারেনকাইমা টিস্যু দিয়ে মূলত এই টিস্যুতন্ত্র গঠিত। এই টিস্যুতন্ত্র কে দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথা- বহিঃস্টিলীয় অঞ্চল ও অন্তঃস্টিলিও অঞ্চল।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Search Ads